ভার্চুয়াল র্যাম্ কি? এটি স্মার্টফোনে কিভাবে কাজ করে?
Vivo র X সিরিজ লঞ্চ হওয়ার সময় আপনারা নিশ্চই ভার্চুয়াল র্যাম্ শব্দটি শুনেছেন। Vivo X 60, Vivo X60 Pro , এবং Vivo X60 Pro + সহ নতুন X সিরিজে কোম্পানিটি অতিরিক্ত 3GB ভার্চুয়াল র্যাম দেওয়া কথা ঘোষণা করেছে। এছাড়া OnePlus কোম্পানিটিও দাবি করেছে যে এটি স্মার্টফোনগুলিতে দ্রুততর করার জন্য অনুরূপ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে তারা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ভার্চুয়াল র্যাম কি ? আপনার স্মার্টফোনে নিয়মিত র্যাম এর থেকে এটি কতটা আলাদা ? চলুন তাহলে ভার্চুয়াল র্যাম এর সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক ।
Table of Contents
ভার্চুয়াল র্যাম কি ?
ভার্চুয়াল র্যাম কোনো নতুন প্রযুক্তি নয়। এর আগে আমরা windows কম্পিউটারে দেখেছি ভার্চুয়াল র্যাম। এছাড়া Linux এবং Mac os এ আমরা swap এরিয়া দেখেছি। এটি সাধারণত ইন্টারন্যাল ফ্ল্যাশ স্টোরেজ থেকে কিছুটা জায়গা গ্রহণ করে অস্থায়ী মেমোরি অর্থাৎ র্যামকে প্রসারিত করার ক্ষমতাকে বোঝায়। এটি খুব সাধারণ র্যাম ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতি , যেখানে সেকেন্ডারি মেমোরি প্রধান মেমোরির অংশ হিসাবে কাজ করে ।
এখানে Vivo কোম্পানিটির X সিরিজে ভার্চুয়াল র্যাম হিসাবে ইন্টারন্যাল UFS 3.1 স্টোরেজ থেকে 3GB পর্যন্ত জায়গা ব্যবহার করে প্রাথমিকভাবে ব্যাকগ্রউন্ডে আরো অ্যাপ সংরক্ষণ করে রাখে। Vivo দাবি করেছে ভার্চুয়াল র্যাম প্রযুক্তি ব্যবহার করে 20 টি অ্যাপ একসাথে ব্যাকগ্রউন্ডে চালানো যাবে।
এই প্রযুক্তি কতটা উপযোগী ?
ভার্চুয়াল র্যাম স্মার্টফোনে ফিজিক্যাল মডিউলের কাজকে কমিয়ে দেয় না , বরং দ্রুত কাজ করতে সাহায্য করে। এইভাবে ভার্চুয়াল র্যাম মূলত ভোলাটাইল কাজের জন্য অতিরিক্ত স্টোরেজ খালি করে ব্যাকগ্রউন্ডে অ্যাপ প্রস্তূত রাখে , যার ফলে কোনো লোডিং টাইম ছাড়াই অ্যাপ খুলে যায়। ভার্চুয়াল র্যাম ব্যবহার করে আপনার ফোনটি সর্বাধিক ব্যাবহৃত অ্যাপগুলিকে সবসময় ব্যাকগ্রউন্ডে প্রস্তূত রাখে, এর ফলে খুব তাড়াতাড়ি অ্যাপ খুলে যায়।
ভার্চুয়াল র্যাম্ কিভাবে কাজ করে ?
এটি পিসি / কম্পিউটারে ব্যাবহৃত ভার্চুয়াল র্যাম এর মতোই কাজ করে। এই কৌশলটি র্যাম এর সঞ্চয় ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ডিভাইসের ইন্টারন্যাল মেমোরি ব্যবহার করে। সাধারণভাবে বলতে গেলে আপনার স্মার্টফোনের ইন্টারন্যাল স্টোরেজের কিছু অংশ ভার্চুয়াল র্যাম হিসাবে সেভ করা থাকে। কোনো অ্যাপ যদি আপনি দীর্ঘদিন ব্যবহার না করেন সেটা র্যাম থেকে ওই ইন্টারন্যাল স্টোরে ট্রান্সফার হয়ে যায়। যখন ওই অ্যাপ আবার খোলা হয় তখন ইন্টারন্যাল স্টোরেজ থেকে র্যাম এ ট্রান্সফার হয়ে যায় ।
আবার ধরুন আপনি একাধিক গেম স্মার্টফোনে ইনস্টল করে রেখেছেন। যখন এই গেমের অ্যাপটি খোলা হয় তখন কিছুক্ষন লোডিং হয় , তারপর অ্যাপটি খুলতে শুরু করে। আমরা জানি কোনো অ্যাপ খোলার সময় র্যাম এর স্টোরেজে লোড হয় , আর এই র্যাম হলো ভোলাটাইল মেমরি , অর্থাৎ কোনো অ্যাপ থেকে বেরহয়ে গেলে র্যাম এ যাবতীয় তথ্য মুছে যায়। এই জন্য কোনো বড়ো অ্যাপ খোলার সময় র্যাম লোডিং টাইম নেয়। এখানে ভার্চুয়াল মেমোরি যে কাজটি করে সেটি হলো আপনি যে অ্যাপ বেশি ব্যবহার করেন সেটি ব্যাকগ্রউন্ডে সবসময় প্রস্তূত থাকে , এই কারণে অ্যাপগুলি খুব তাড়াতাড়ি খুলে যায়।
ভার্চুয়াল র্যাম কি সত্যিই কার্যকর নাকি একটি মার্কেটিং গিমিক ?
কোম্পানির বক্তব্য হলো এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে অ্যাপগুলি কম ব্যাবহৃত হয় সেই অ্যাপগুলি সিলেক্ট করে স্মার্টফোনের ভার্চুয়াল ইন্টারন্যাল স্টোরে স্থানান্তর করে। এটি র্যাম এর উপর লোড অনেকটাই কমিয়ে দেয়, এবং র্যামকে আরো ভালোকরে কাজ করতে সাহায্য করে। কিন্তু এটি আপনার ফোনের 8GB র্যামকে কোনো ভাবেই 12 GB তে রূপান্তর করে না। অর্থাৎ আপনার ফোনে যা র্যাম আছে সেটাই থাকে , এতে কোনো পরিবর্তন হয় না। তবে ভার্চুয়াল র্যাম প্রযুক্তির ফলে র্যাম এর কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক বেশি দক্ষ করে তোলে। সেই অর্থে এই প্রযুক্তি অত্যন্ত দরকারি এবং এটি কোনো মার্কেটিং গিমিক বলে মনে হচ্ছে না।